ইসলামী সাহিত্যের নিদর্শন

Image
ইসলামী সাহিত্যের নিদর্শন ইসলামী দাওয়াত প্রথম দিন থেকেই সঠিক বিপ্লবের রূপে আত্মপ্রকাশ করে। চিন্তার মোড় ফিরিয়ে দেয়া, কথা ও কাজের ধারার পরিবর্তন করা এবং সমাজ কাঠামো বদলে দেয়াই হয় তার লক্ষ্য। সাহিত্যের যে ধারা জাহেলী যুগ থেকে চলে আসছিল ইসলাম এসে তার খোল নলচে পাল্টে দেয়। জাহেলী যুগের কবিদের সম্পর্কে কুরআনের সূরা আশ শূ’আরায় বলা হয়: ওয়াশ শু’আরাউ ইয়াত্তাবিউ হুমুল গবূন, আলাম তারা আন্নাহুম ফী কুল্লি ওয়াদিঁই ইয়াহীমূন, ওয়া আন্নাহুম ইয়াকূলূনা মা-লাইয়াফআলূন – “আর কবিরা! ওদের পেছনে তো চলে পথভ্রষ্ট যারা, দেখছোনা তারা মাথা খুঁড়ে ফেরে প্রতি ময়দানে আর বলে বেড়ায় যা করে না তাই।“ এভাবে জাহেলী যুগের সাহিত্য চিন্তার মূলধারাকে ইসলাম ভ্রষ্টতার আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করে। জাহেলী যুগের সাহিত্য চিন্তা কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্যাভিসারী ছিল না। বিভ্রান্ত চিন্তার বিভিন্ন অলিতে গলিতে সে চিন্তা ছুটে বেড়াতো। চিন্তার স্থিরতার মাধ্যমে জীবনকে কোন এক লক্ষ্যবিন্দুতে পৌঁছিয়ে দেয়ার দায়িত্ব সেখানে নেয়া হয়নি। তাই জাহেলী যুগের কবিদের কথা ও কাজের কোন মিল ছিল না। বড় বড় বুলি আওড়ানোই ছিল তাদের পেশা। সেই অনুযায়ী কাজ করা বা নিজেদের দাবী অনুযায়ী ...

জীবন ও জগতের সম্পর্ক












জীবন ও জগতের সম্পর্ক-

আমরা প্রথম চোখ মেলি পৃথিবীর কোলে। পৃথিবীর আলো বাতাসে আমাদের প্রাণ স্পন্দিত হয়। এর খাদ্য শস্য ফলমূলে দেহ পরিপুষ্ট হয়। জীবনে জোয়ার আসে। জীবনের নৌকা ভেসে চলে গভীর পানিতে। আমাদের চারপাশের এই পৃথিবী, আকাশ-বাতাস, আলো-আঁধার, প্রকৃতি-পরিবেশ সবটা নিয়ে আমাদের জগত। আমাদের চিন্তা ভাবনা, আশা-আকাংখা, আগ্রহ-অনাগ্রহ তার ঘোড়া ছুটিয়ে চলে যতক্ষণ আমরা এই জগতের বুকে আছি ততক্ষণ। যখনই চোখ দু’টি মুদে জগতের বুক থেকে বিদায় নিই মুহূর্তেই সেই দূরন্ত ছুটন্ত ঘোড়া উধাও হয়।


আমাদের জীবন আমাদের জগতের সাথে এক সূতোয় বাঁধা। একটা টানলে আরটা আসে, আরটা টানলে অন্যটা আসে। জীবন শেষ হয়ে গেলে মনে হয় জগতও বুঝি নেই। আবার জগতের যেদিন শেষ মুহূর্ত ঘোষিত হবে সেদিন জীবনেরও বিলোপ ঘটবে। কল্পনার পাখায় ভর করে আমরা জগতের সীমানাও পেরিয়ে যাই। কিন্তু চৈতন্য ফিরে পাওয়ার সাথে সাথেই কল্পনার পাখিটি দুম করে আছড়ে পড়ে জগতের বুকে। জগতের সূতোয় আমাদের জীবন আষ্টে-পৃষ্ঠে বাঁধা। একটু নড়াচড়া করে পটপট করে যে এই সূতোগুলো ছিড়ব সে আশায়ও গুড়ে বালি।


যতদিন জগতের বুকে থাকি আমরা কাজ করে যাই। ভালো মন্দ সব রকম কাজ আমরা করি। জগতটা যেন যন্ত্র আমরা তার চালক। এই যন্ত্রে হাত রাখলেই তার চাকা ঘুরতে থাকে। পেছনের দিকে ঘুরুক বা সামনের দিকে ঘুরুক, এদিকে ঘুরুক বা ওদিকে ঘুরুক, তা ঘুরতেই থাকে, অনবরত ঘুরতে থাকে। অথবা আমরা যেন যন্ত্র আর জগতটা তার চালক। যে রকম ইচ্ছে সে আমাদের চাকা ঘুরাতে থাকে। তার দরবারে করুনার আর্জি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া তখন আমাদের আর কোন উপায় থাকে না। এ অবস্থায় আমরা হয়ে পড়ি মানবেতর। মহত কিছু সৃষ্টি, বৃহত কিছু করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। আমাদের সৃষ্টি আমাদের কাজ তাই কালই আমাদের বা আমাদের উত্তর পুরুষদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। আর জগতকে যখন আমরা বশ করি, কাজে লাগাই তখন আমাদের সৃষ্টি হয়ে ওঠে মহত্তর, কালোত্তীর্ণ। আমরা জগত থেকে বিদায় নিই। কিন্তু আমাদের সৃষ্টি থেকে যায় আমাদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর হয়ে।


জগতের সাথে আমাদের জীবনের সম্পর্ক কী তা মনে হয় এই আলোচনা থেকে অনেকটা খোলাসা হয়ে গেছে। এখন এই জীবন ও জগতের উদ্দেশ্য জানতে হবে। তবে তার আগে জীবন ও জগতের স্রষ্টা কে তা অবশ্য জানা প্রয়োজন। 

Comments